1. domhostregbd@gmail.com : devteam :

January 17, 2025, 2:47 pm

ডলারের বিপরীতে রুপির দর ৮০-তে উঠল

ডলারের বিপরীতে রুপির দর ৮০-তে উঠল

ডলারের বিপরীতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অব্যাহতভাবে স্থানীয় মুদ্রার দরপতন চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন রেকর্ড করল ভারতীয় মুদ্রা রুপির দাম। সোমবার দিনের একপর্যায়ে ভারতের প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৮০ রুপি।

এর ফলে প্রথমবারের মতো ৮০ রুপিতে লেনদেন হয়েছে প্রতি ডলার। যদিও দিন শেষে সর্বোচ্চ এ দাম আর ধরে রাখতে পারেনি। দিন শেষে ডলারের দাম নেমে আসে ৭৯ দশমিক ৯৮ রুপিতে। মঙ্গলবার সেই দাম আরও একটু কমে দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৫৬ রুপিতে। ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কয়েক দিন ধরে ভারতের মুদ্রার ক্রমাগত পতনের জেরে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে মোদি সরকার। সোমবার লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে রুপির দর নিয়ে মুখ খোলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।

জানালেন, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর (ডলার ছিল ৬৩ দশমিক ৩৩ রুপি) থেকে এখন পর্যন্ত ভারতীয় মুদ্রার দর পড়েছে ২৫ শতাংশ। এই পতনের অন্যতম কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলোর পুঁজি তুলে নেওয়া।

নির্মলার দাবি, রুশ–ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের উচ্চমূল্য এবং বিভিন্ন দেশে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে রুপির দরপতন হচ্ছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে ভারতের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রমাগত পুঁজি প্রত্যাহারের বিরূপ প্রভাব দেখা গেছে রুপির দরে।

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা প্রায় ১৫৬ কোটি রুপির শেয়ার কিনেছে। তাতে ভারতের প্রধান শেয়ারবাজার বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স বেড়েছে ৭৬০ পয়েন্ট।

তবে শুধু ভারতীয় মুদ্রা রুপিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার দরপতন হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিশ্বের প্রায় সব মুদ্রার মানের অবনমন ঘটেছে। ২০২২-এর প্রথমার্ধে রুপির দরপতন হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। এর সঙ্গে তুলনা টানলে দেখা যাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অভিন্ন মুদ্রা ইউরোর মানের অবনমন ঘটেছে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ, জাপানি মুদ্রা ইয়েনের ক্ষেত্রে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ আর যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ডের দরপতন হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। চীনের ইউয়ানে অবনমনের চিহ্ন কমই দেখা যায়, মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

দ্য ইউএস ডলার ইনডেক্স অনুযায়ী, গত ২০ বছরের মধ্যে ডলারের মান এখন সবচেয়ে বেশি। বিশ্লেষকদের মতে, এ মুহূর্তে ডলারের সাপেক্ষে অন্যান্য মুদ্রার দরপতনের বহুবিধ কারণ থাকলেও প্রধান কারণ দুটি। এক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে পেট্রোলিয়াম থেকে রকমারি পণ্য—সবকিছুরই দাম বেড়েছে।

বহু ক্ষেত্রেই আমদানির পরিমাণ যেহেতু স্বল্প মেয়াদে কমানো অসম্ভব, তাই আমদানি খাতে ব্যয় বেড়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সব দেশেই। তাতে ডলার শক্তিশালী হয়েছে, উল্টো দিকে স্থানীয় মুদ্রার দরপতন হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়েছে।

সারা পৃথিবীতে আর্থিক ক্ষেত্রে তুমুল অনিশ্চয়তা চলছে—এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করেন। সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন ডলার সে দেশেই জমা রাখা লাভজনক, নিরাপদ। ফলে ভারতের মতো বাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার হিড়িক পড়েছে। গোটা এশিয়াতেই স্থানীয় মুদ্রা এখন দুর্বল; চীনের ইউয়ান, জাপানের ইয়েন—সব কটিরই পতন ঘটছে। বাংলাদেশের মুদ্রারও দরপতন হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2022 duibangla.com
Developed by duibangla.com Team